
খুবিতে শায়খ আহমাদুল্লাহ : সীরাতের আলোকে জীবন গঠনের আহ্বান
২৭ অক্টোবর, ২০২৪, রাত ১২:০০
শায়খ আহমাদুল্লাহ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ৮ আক্টোবর (২০২৪) অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ সীরাত সেমিনার। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি রাসুল (সা.)-এর আখলাক বা উত্তম চরিত্রের ওপর ঘণ্টা ব্যাপী আলোচনা করেন।
আলোচনার শুরুতে তিনি আখলাক সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। যে হাদীসগুলোতে উত্তম চরিত্রের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক বেশি নফল ইবাদত করে আল্লাহ ততটা প্রিয় হওয়া যায় না, যতটা প্রিয় হওয়া যায় উত্তম চরিত্র দ্বারা। এই পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের মানুষ ছিলেন রাসুল (সা.)। তিনি এমন চরিত্রের মানুষ ছিলেন, তার উত্তম চরিত্রের সাক্ষ্য দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ।
উত্তম চরিত্রের অর্থ মাথা নত করে চলাফেরা করা নয়। উত্তম চরিত্রের সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হলো বান্দার কোনো হক নষ্ট না করা। অনেকে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন, বিনয়ী হয়ে চলেন, অথচ মানুষের ক্ষতি করায় সিদ্ধহস্ত। এর নাম উত্তম চরিত্র না।
রাসুলের (সা.) চরিত্রের উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, রাসুল (সা.) জীবনভর প্রতিকূলতার ভেতর জীবন অতিবাহিত করেছেন। কিন্তু কোনোদিন পার্থিব কারণে কারো ওপর বিরক্ত হয়েছেন, রাগ দেখিয়েছেন, এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না। আনাস (রা.) দীর্ঘ দশ বছর রাসুলের খাদেম ছিলেন। এই দশ বছরে তিনি কখনো আনাসকে (রা.) বলেননি, আনাস, তুমি এটা কেন করলে বা কেন করলে না! সংসারে একাধিক স্ত্রী থাকার পরও রাসুল (সা.) কখনো মেজাজ হারাননি। বরং সবার সাথে সব সময় সুন্দর আচরণ করেছেন। এমনকি পশু-পাখিদের সাথেও তিনি উত্তম আচরণের কথা বলেছেন। কোনো প্রাণীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরো বলেন, আখলাকের আরেকটি বড় দিক হলো সত্যবাদিতা। রাসুল (সা.) এমন সত্যবাদী ছিলেন, জাহিলি যুগেই তিনি আল-আমিন বা বিশ্বস্ত উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।
আখলাকের আরেকটি দিক হলো বিনয়। রাসুল (সা.) আপাদমস্তক বিনয়ী মানুষ ছিলেন। তার এমন বিনয় ছিল, যখন তিনি মজলিশে বসতেন, অচেনা লোকেরা তাকে আলাদাভাবে চিনতে পারত না।