news

তরুণদেরকে নৈতিকতায় বলীয়ান হতে হবে : আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, রাত ১২:০০

শায়খ আহমাদুল্লাহ

মুসলিম তরুণদেরকে নীতি-নৈতিকতায় বলীয়ান হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ইসলামিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে তরুণদের কুরআনকে নির্মোহভাবে পাঠ করা এবং প্রিয়নবী (সা.)-এর জীবনী অধ্যয়ন করা একান্ত জরুরি। শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, প্রত্যেক মুসলমানের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইবাদত করা। মুসলিম হিসেবে ঈমানের ওপর টিকে থাকার জন্য সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সাহস রাখতে হবে। তারুণ্যের সময়টাকে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেয়া যাবে না। কারণ মুমিনের প্রতিটা মুহূর্ত মূল্যবান। প্রতিটা সেকেন্ডকে হিসাব করে খরচ করতে হবে। প্রতিটা মুহূর্তকে সৃজনশীল কাজে ব্যয় করতে হবে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ইসলাম আমাদেরকে ত্যাগের শিক্ষা দেয় আর বর্তমান পশ্চিমা সভ্যতা আমদেরকে ভোগের শিক্ষা দেয়। মুসলিম হিসেবে আমাদেরকে ভোগের পথ অবলম্বন না করে ত্যাগের দীক্ষায় দীক্ষিত হতে হবে।

শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ইসলাম জ্ঞানের ধর্ম। কুরআন কারীমের প্রথম নির্দেশই হলো পড়ো। কুরআন কারীমের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ জ্ঞানার্জনের প্রতি উৎসাহিত করেছেন। অথচ আমরা অধিকাংশই ইসলাম সম্পর্কে পারিবারিকভাবে দেখে এবং শুনে শুনে পালন করছি। আমাদের উচিত অধ্যয়ন করা, ইসলাম সম্পর্কে পড়ে প্রত্যক্ষভাবে জানা, উপলব্ধি করা এবং আন্তরিকভাবে ধারণ করা। অন্তত কুরআনকে জীবনে একবার হলেও অনুবাদসহ পাঠ করা, একটা হাদীসগ্রন্থ অধ্যয়ন করা এবং রাষূল (সা.)-এর একটা জীবনীগ্রন্থ পড়া আমাদের সবার কর্তব্য। এটুকু মুসলমানিত্বের দাবি। কুরআন এবং সীরাত জীবন্ত মুজিযা। এগুলো মানুষকে সত্যে পথে দিশা দেয়, সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করে।

শায়খ আহমাদুল্লাহকে বরণ করে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জনাব মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহী।ইসলামের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ সেমিনারে আরো বলেন, ইসলামের সুন্দর দিকগুলোর মধ্য হতে অন্যতম একটি হলো উত্তম আচরণ। অথচ মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও আমাদের মধ্যে সদাচারের যথাযথ চর্চা নেই। ভোগ-বিলাস ও অপরকে ডিঙিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আমরা লিপ্ত। আমাদের মূল্যবোধ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, তা চল্লিশ বছর আগের পরিবেশের সাথে তুলনা করলে স্পষ্ট হয়ে যাবে। অথচ আমাদের নবী (সা.) তাঁর জীবনাচারের মধ্য দিয়ে উত্তম আচরণের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন। তিনি অমুসলিম প্রতিবেশীর সঙ্গেও সদাচার করতেন। পক্ষান্তরে আমরা আমাদের মুসলিম প্রতিবেশীর সঙ্গেও উত্তম আচরণ করতে পারছি না। এমনকি আমরা আমাদের আমাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচার করতে অভ্যস্ত নই। তিনি বলেন, প্রিয় নবীর উম্মত হিসেবে আমাদের আচরণ সুন্দর করতে হবে।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহীট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে শায়খ আহমাদুল্লাহ ছাত্র-শিক্ষকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।