
নারী-উত্ত্যক্তকরণ : দায়ী কে, পোশাক নাকি মনোভাব
৯ এপ্রিল, ২০২২, রাত ১২:০০
শায়খ আহমাদুল্লাহ
তথাকথিত আধুনিক সভ্যতা যত বেশি বিস্তৃত হচ্ছে, নারী-উত্ত্যক্তকরণের ঘটনা তত বেড়েই চলছে। কোনোভাবেই একে থামানো যাচ্ছে না। এ থেকে উত্তরণের উপায়টা কী? আসল সমস্যাটা কোথায়? কিছু লোক বলছেন, মূল সমস্যাটা নারীর পোশাকে। নারীর পোশাক যদি শালীন হয়ে যায়, তাহলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আবার কিছু লোক বলছেন, মূল সমস্যা পুরুষের মনে। পুরুষের মন যদি ঠিক হয়ে যায়, তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। তাহলে মেয়েদের পোশাক ঠিক না করলেও বা অশালীন হলেও সমস্যা হবে না। আসল সত্য কোনটা? কুরআন কারীম আমাদেরকে দেড় হাজার বছর আগে এই সমস্যার বাস্তব-ভিক্তিক সমাধান দিয়ে গেছে। কুরআন বলছে, উত্তরণের একমাত্র উপায় হলো, একই সঙ্গে নারীকে তার পোশাক-আশাক ও চলন-বলনে শালীন হতে হবে, খোলামেলা হওয়া যাবে না; আবার পুরুষকেও তার মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কুরআন কারীমের সূরা নূরের ৩০ এবং ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এই চিরন্তন সত্য এবং চরম বাস্তব বিষয়টি আলোকপাত করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা শুরুতেই পুরুষকে দৃষ্টিকে সংযত রাখার নির্দেশ করেছেন। আল্লাহ বলেছেন, قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ‘আপনি মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করে।’ (সূরা নূর: আয়াত ৩০) এর পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা নারীকেও বলেছেন, وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ ‘নারীরা যেন তাদের সৌন্দর্য (পরপুরুষের কাছে) প্রকাশ না করে।’ (সূরা নূর: আয়াত ৩১) খোলামেলা পোশাক পরে নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করলে কী সমস্যা হবে? আর খোলামেলা পোশাক পরে সৌন্দর্য প্রকাশ না করলে তথা পর্দা করলে কী লাভ হবে? আল্লাহ সে ব্যাপারে অন্য আয়াতে বলেছেন, فَلَا يُؤْذَيْنَ ‘(পর্দাসহ চললে) তাদেরকে উত্তক্ত করা হবে না।’ (সূরা আহযাব: আয়াত ৫৯) কারণ জানবে না যে, মেয়েটা দেখতে কেমন। তাছাড়া না দেখার কারণে আকর্ষণ বোধ করবে না। ফলে উত্ত্যক্ত করতে প্ররোচিত হবে না। কুরআন কারীমের এই দু’টি আয়াত আমাদেরকে একই সঙ্গে উভয় পন্থা অবলম্বন করার নির্দেশ করেছে। পুরুষকে তার দৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছে আর নারীকে তার পোশাক-আশাকে শালীন থাকতে বলেছে। যখন এই পন্থা একসঙ্গে বাস্তবায়িত হবে, তখন সমাজ থেকে নারী-নিগ্রহ, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি দিন দিন কমতে থাকবে ইন-শা-আল্লাহ । আমাদের দেশের অত্যন্ত পরিচিত একজন অভিনেতা মোশারফ করিম সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে একটা উক্তি করেছেন। যা অত্যন্ত আপত্তিকর, অত্যন্ত জঘন্য, অবাস্তব এবং অযৌক্তিক। তিনি যা বলেছেন তার সারাংশ হলো, ‘আমাদের দেশে ছোট শিশুদের নির্যাতনের কথাও তো আমরা শুনি। বোরকা পরা মেয়েরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সুতরাং বোরকা পরে লাভ নেই। এগুলো পরেও তো রেহাই পাওয়া যায় না।’ এই যুক্তি এতটাই হাস্যকর, এতটাই ছেলেমানুষি যুক্তি— যা আমরা কয়েকটা উপমার মাধ্যমে বোঝালে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমাদের দেশে বোরকা পরিহিত মেয়েরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, মোশাররফ করিমের এই বক্তব্য সঠিক। কিন্তু তার পরিমাণ কত? বোরকা পরা কয়টা মেয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়? যারা বোরকা পরে আর যারা বোরকা পরে না, এরকম একশ’জন মেয়েকে একত্র করে তাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানতে চান যে কারা বেশি যৌন নির্যানের শিকার? তাহলে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। এটা কাউকে বলে যুক্তি-প্রমাণ দিয়ে বোঝানোর দরকার হবে না। যারা ইসলামী ড্রেসকোড ফলো করে না, যারা বোরকা পরে না, হিজাব পরে না, যারা যত বেশি খোলামেলাভাবে চলে তারা তত বেশি যৌন নিগ্রহের শিকার। তাহলে সমাধানের পথ তো এখানেই পাওয়া গেছে। যারা বোরকা পরে তারা কম নির্যাতনের শিকার হয়। এবার আসি শিশু নির্যাতনের হার সম্পর্কে। প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা যে পরিমাণ যৌন নিগ্রহের শিকার হয়, সেই তুলনায় কয়জন শিশু যৌন নিগ্রহের শিকার হয়? পরিমাণের দিক দিয়ে দু’টির তুলনাই হতে পারে না। তারপরও যারা বোরকা পরিহিত হয়েও উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে, শিশুরাও যে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে—এর মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা আছে। যারা খোলামেলা পোশাকে চলাফেরা করছে, এদের দ্বারা পুরুষরা যৌনতা-তাড়িত হচ্ছে। যৌন-তাড়িত অবস্থায় সুযোগমত যাদেরকে পাচ্ছে তাদের ওপর হামলে পড়ছে। খোলামেলা মেয়েকে দেখে যৌনতা-তাড়িত হলেও সুযোগের অভাবে তাদের ওপর কামভাব চরিতার্থ করতে পারে নি। কিন্তু দেখা গেছে পরে সুযোগমত যাকে পেয়েছে, সে বোরকা পরিহিত অথবা শিশু। উদাহরণস্বরূপ: একজন যুবক যখন নাটকে, সিনেমায়, অফলাইনে, অনলাইনে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন নারীর শরীর প্রদর্শনী দেখে, তখন তার মধ্যে কামভাব জাগ্রত হয়। তার মধ্যে পশুত্ব জাগ্রত হতে থাকে। যৌন আবেদন তার মধ্যে সৃষ্টি হতে থাকে। কিন্তু যেগুলো সে দেখে সেগুলোকে হাতের নাগালে পায় না। তখন নিরীহ যাকে হাতের নাগালে পায়, তার ওপর সে আক্রমণ করে বসে। সুতরাং যেসব বোরকা পরিহিত মেয়ে ও শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তাদের নির্যাতিত হওয়ার পেছনেও খোলামেলো পোশাক পরিহিতরা অনেকাংশে দায়ী। তাছাড়া আগেই বলেছি, এরা নির্যাতিত হলেও তুলনামূলক খোলামেলা পোশাক পরিধানকারীদের চেয়ে কম। অতএব সমাধানের জায়গাটা এখান থেকে একেবারে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। জুতা আবিষ্কারের একটা গল্প প্রচলিত আছে। এক রাজা জুতা আবিষ্কৃত হওয়ার আগে বলছিলেন, আমি যখন বের হবো তখন কাঁটা বা ক্ষতিকর কিছু আমার পায়ের নিচে পড়তে পারে। এতে আমার কষ্ট হবে। এর সমাধান কী হতে পারে? কিছু লোক বুদ্ধি দিল যে, তাহলে আমরা একটা ঝাড়ুদার বাহিনী নিয়োগ দিই। মহারাজ যেদিকে যাবেন, তার আগে আগে তার পথে ঝাড়ু দিতে থাকবে। তখন একজন বলল, এতে তো সমাধান অনেক কঠিন হয়ে গেল। কারণ সারা দুনিয়া ঝাড়ু দিয়ে বেড়াতে হবে। তার চেয়ে ভালো হয়, যদি আপনি আপনার দুই পায়ে জুতা পরিধান করেন। তাহলে সারা দুনিয়া ঝাড়ু দিতে হয় না। মোশাররফ করিম সাহেবের মতো তথাকথিত প্রগতিশীলদের জন্য এই ঘটনায় শিক্ষা রয়েছে। আপনি সারা দুনিয়ার পুরুষদেরকে মনকে কন্ট্রোল করবেন সেটা বেশি সহজ, নাকি নারীরা শালীন পোশাক পরবেন সেটা বেশি সহজ? শালীন পোশাক পরা সহজ, যাতে অন্যর লোলুপ দৃষ্টি তার ওপর না পড়ে। চুরি-ডাকাতি পৃথিবীর শুরু থেকে চলে আসছে এবং এখনও আছে। চুরি থেকে বাঁচার জন্য, প্রত্যেকে যার যার সম্পদকে রক্ষা করার জন্য একসময় সম্পদ সিন্দুকে রাখত, এরপরে মানুষ দরজা বন্ধ করে রাখে, এরপরে এখন কলাপসিবল গেইট দিয়ে রাখে, এরপরে প্রহরীর ব্যবস্থা শুরু হয়েছে, এরপরে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা হয়েছে। এত সব ব্যবস্থাপনা কেন? সম্পদ সংরক্ষণ করবার জন্য। এখানে কেন আপনি বলেন না, আমাদের এত কষ্ট করার দরকার কী, সবার মন ঠিক করে ফেললেই তো হয়। অন্যের সম্পদের দিকে দৃষ্টি না দিলেই তো হয়। সবাই যার যার মন ঠিক করে ফেলুন। তাহলে তো এতে তালা, কলাপসিবল গেইট, সিসি ক্যামেরা, প্রহরী, দারোয়ান ও পুলিশের দরকার হয় না। এখানে এই কথা কেন বলেন না। কারণ সম্পদ যার, সংরক্ষণ করবার দায়িত্ব তার। যাতে করে চোর তার দিকে হাত না বাড়াতে পারে। এটিই হলো লজিক। চোর ধর্মের কথা শুনবে না, নিজেকেই চোরের হাত থেকে বাঁচার পন্থা অবলম্বন করতে হবে। অতএব কোনো নারী যদি নির্যাতনের আশঙ্কা বোধ করেন, তার দায়িত্ব হলো তিনি উত্ত্যক্তকারীদের সুড়সুড়ি দেবেন না। নিজে শালীনভাবে চলবেন, যাতে অন্যের কুদৃষ্টি তার দিকে পতিত না হয়। এটিই যুক্তিসঙ্গত। আপনি সারা দুনিয়ার মানুষের মন ঠিক করার যে মিশনে নামছেন, এতে খুব কম সফল হবেন। আমি যদি প্রশ্ন করি, পৃথিবীতে তথাকথিত সভ্য, উন্নত, শিক্ষিত ও আধুনিক—যাদেরকে আমরা অনুসরণ করি, যাদেরকে আমরা আদর্শ মনে করি—তাদের দেশে নারী নির্যাতনের হার তো কম নয়। তারা তো পুরুষের মন ঠিক করার চেষ্টা অনকে আগে থেকে করছে। সেই হিসেবে তো সেখানে নারী নির্যাতন থাকার কথা নয়। তবু এত বেশি আছে কেন? সেসব দেশের নারীরা যে পরিমাণ কর্মস্থলে যৌন নিগ্রহের শিকার হন, স্কুলে যৌন নিগ্রহের শিকার হন— সে পরিমাণ যৌন নিগ্রহের শিকার আমাদের তথাকথিত অনুন্নত বা উন্নয়শীল দেশগুলোতে হয় না। তাহলে আপনি কী মন ঠিক করবেন, যারা আপনাকে মন ঠিক করার সবক দিচ্ছে তাদের দেশেই তো তথাকথিত মন ঠিক করার পরেও, আধুনিক স্মার্ট হওয়ার পরেও, শিক্ষিত হওয়ার পরেও যৌন নির্যাতনের পরিমাণ কমে নি বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে। সৌদি আরবে পৃথিবীর যে কোনো দেশের চেয়ে নারীর প্রতি যৌন নির্যাতনের হার সবচেয়ে কম। এখানে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। এখানে কোনো নারী দুই-তিন মাইল পায়ে হেঁটে চলে গেলেও কেউ তার দিকে ফিরেও তাকায় না। এখানে নারীরা এক-দুই কেজি স্বর্ণ শরীরে নিয়ে মরুভূমিতে চলে যায়, কেউ তাদের দিকে হাত বাড়ানোর সাহস করে না। প্রত্যেক বছরের জরিপ এটাই বলছে। সৌদি আরবে কোন জিনিসটা আছে, যার কারণে যৌন নির্যাতনের হার কমে গেছে? এক. এখানে আল্লাহর আইনের বাস্তবায়ন আছে। দুই. নারীকে এখানে শালীনভাবে চলতে বাধ্য করা হয়। যার কারণে নারীরা এখানে নিরাপদে। আমার কিছু ভাই বলবেন, সৌদি আরবে বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া গৃহকর্মীরা তো যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। তাহলে সৌদি আরব কীভাবে ভালো দেশ হলো? এর জবাব হলো, এর কারণও আল্লাহর আইনের লঙ্ঘন। গৃহকর্মী যারা এখানে এসেছেন, তারা ইসলামী আইন লঙ্ঘন করে এসেছেন। এদেশের উলামা কিরাম এর বিরুদ্ধে এখনও সৌচ্চার। কেউই তাদের সৌদি আরবে আসা জায়েয এবং হালাল বলেন না। গৃহকর্মীরা যে ঘরে থাকেন, সেই ঘরের পুরুষদের সাথে তার পর্দা করা সম্ভব না এবং তিনি পর্দা করেনও না। আর যেহেতু তিনি পর্দা করছেন না, সেজন্যই তার ওপর পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি পড়ছে এবং তিনি যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। আজ তিনি যদি আল্লাহর আইন অনুসরণ করতেন, তাহলে নির্যাতনের শিকার হতেন না। আল্লাহর আইন অনুযায়ী নারীরা মাহরাম ছাড়া দূরের দেশ সফর করতে পারবেন না। তা সত্ত্বেও তারা মাহরাম ছাড়া হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে চলে এসেছেন। এর অনুমতি তো ইসলাম তাদেরকে দেয় নি। সুতরাং বলা যায়, তারা নিজেরা নিজেদের নিরাপত্তা নষ্ট করেছেন। পর্দা নারীর নিরাপত্তার জন্য। যেমন সম্পদের নিরাপত্তার জন্য তালার ব্যবস্থা করা হয়, তেমনি নারীর নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পর্দার বিধান আরোপ করেছেন। সুতরাং তা মেনে চলতে প্রতিটা নারী বাধ্য। তাহলে সে আখিরাতে তো শান্তিতে থাকবেই, দুনিয়ায়ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত থকবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে সমাধানের সূত্র বাতলে দিয়েছেন। সমাধানের দু’টি সূত্র। প্রথমে আল্লাহ শুরুতেই বলেছেন, পুরুষকে তার চোখকে সংযত রাখার জন্য। এরপর বলেছেন, মহিলারা যেন তাদের শরীরের সৌন্দর্য অন্যর সামনে প্রকাশ না করে। যদি করে তাহলে তারা উত্ত্যক্তের শিকার তারা হবেন। এটাই হলো চরম বাস্তবতা। এর কোনো বিকল্প নেই। যে মেয়েরা নিজেদেরকে যত বেশি সংরক্ষিত রাখেন, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাদেরকে তত বেশি হেফাজত করেন। এই বাস্তবতা অস্বীকার করতে পারে শুধুমাত্র অন্ধ। এছাড়া কেউ এটাকে অস্বীকার করতে পারে না। পরিশেষে কুরআন কারীমের একটি আয়াত উল্লেখ করছি। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন, إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَاللَّـهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিতে চায়, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া এবং আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি। আল্লাহ জানেন, যা তোমরা জানো না।’ (সূরা নূর: আয়াত ১৯) যারা আমাদের সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিতে চায়, আখিরাতে এদের শাস্তি তো হবেই, দুনিয়াতেও তাদের বহুমুখি শাস্তি হয়। তার একটি শাস্তির কথা যদি বলি, মোশাররফ করিমদের মতো অভিনেতদের বিরাট একটা অংশ আত্মহত্যা করে মারা যায়। এদের পারিবারিক জীবনে শান্তি নেই। তিনটা-চারটা বিয়ে করেও এরা সুখ-শান্তি পায় না। আমরা যে পারিবারিক স্বাদ পাই, আমরা যে পরিবারকে জান্নাতের মতো উপভোগ করি— এই সুযোগ তাদের হয় না। তাদের জীবনকে আল্লাহ তায়ালা জীবন্ত জাহান্নাম বানিয়ে দেন। তারা মানুষের সামনে অভিনয় করে যে, তারা অনেক সুখে আছে। আসলে এদের জীবনটা জাহান্নামে পরিণত হয়ে গেছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য এই কষ্ট দুনিয়াতে রেখেছেন। আর আখিরাতে তো শাস্তি আছেই। আল্লাহ তায়ালা এদের ষড়যন্ত্র থেকে আমাদেরকে, আমাদের সমাজকে, আমাদের মা-বোনকে হেফাজতে রাখুন। আমাদের সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। তাদের দূরভিসন্ধী সম্পর্কে সমাজের মানুষকে সচেতন করতে হবে। আমাদেরকে সংকল্প করতে হবে, এদের ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের মা-বোনদের হেফাজত করব। আর আমরা নিজেরাও নিজের নজর সংযত করব। তাহলে ইন-শা-আল্লাহ দুনিয়াতে সুখী হব, আখিরাতেও সুখী হবো। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন।